অবশেষে গুঞ্জন-ই সত্যি হল। অপু বিশ্বাসকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন
শাকিব খান। কলকাতা থেকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শাকিব খান বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার
কলকাতা আশার সময় আমি ডিভোর্স পেপারে সাক্ষর করে এসেছি। তবে অপু এখনও সেই পেপার
পেয়েছে কিনা সেটা আমি যানি না।’
এর আগে এ বিষয়ে শাকিব খানের বন্ধু ও প্রযোজক ইকবালের সাথে কথা হলে
তিনি জানান, ‘হ্যাঁ বিষয়টি সত্যি। ইতোমধ্যে ব্যারিস্টার রোকনের মাধ্যমে অপুর
বাসায় ডিভোর্স লেটার পাঠানো হয়েছে।’
তবে নায়িকা অপু বিশ্বাসের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা
হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যানি। ডিভোর্স এর ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে গণমাধ্যমকর্মীরা
এখন অপুর বাসার সামনে অবস্থান করছে। বাড়ির দারোয়ান বলেন, অপু সকালে বাসা
থেকে বের হয়েছেন। কোথায় গেছেন সেটা তিনি জানেন না।
শাকিব খানকে পেতে ধর্ম পরিবর্তন করে অপু বিশ্বাস হয়েছিলেন অপু
ইসলাম খান। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হলো না। অপুকে জীবন থেকে ছেঁটে ফেলতে তালাকনামায়
শাকিব লিখলেন, বিয়ের পর ‘মুসলিম রীতি মেনে না চলায়’ ও ‘ছেলেবন্ধুকে নিয়ে
বাইরে ঘুরতে যাওয়ায়’ বিচ্ছেদ চান তিনি।
২২ নভেম্বর অপুর ঠিকানায় পাঠানো তালাকনামায় শাকিব খান ‘এ কারণ দেখিয়েছেন’ বলে জানান
শাকিবের আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বিয়ের সময় ধর্মান্তরিত হয়ে অপু বিশ্বাস শাকিব খানকে বিয়ে করেছিলেন।
কথা ছিল তিনি মুসলিম রীতিনীতি মেনে চলবেন ও গৃহিনী হয়ে থাকবেন। কিন্তু অপু বিশ্বাস
সে কথা রাখেননি।’
তালাকনামায় শাকিব অভিযোগ তোলেন, পুত্রসন্তান জয়কে
তালাবদ্ধ রেখে ছেলেবন্ধুকে নিয়ে দেশের বাইরে ঘুরতে যান অপু। তবে এই ‘ছেলেবন্ধু’টি কে, সেব্যাপারটি
শাকিব খোলসা করেননি।
শাকিব উল্লেখ করেন, ছেলেকে তালাবদ্ধ করে রাখার খবর
জানামাত্রই অপুর বাসায় ছুটে যান তিনি। কিন্তু সন্তানকে উদ্ধার করতে না পেরে পরে
সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করেন।
তবে অপু বিশ্বাস বিষয়টি অস্বীকার করে গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তিনি চিকিৎসা
করাতে কলকাতায় গিয়েছিলেন। ছেলে জয়কে কাজের মেয়ের কাছে নয়, বড়বোনের কাছে
রেখে গিয়েছিলেন। ছেলেকে ভারতে না নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানিয়েছিলেন, কলকাতার শীতের
প্রকোপের কারণেই ছেলেকে রেখে গিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস তাদের বিয়ের খবর গত নয় বছর ধরে গোপন
রেখেছিলেন। এরপর এ বছরের ১০ এপ্রিল (সোমবার) বিকেল ৪টায় দেশের একটি বেসরকারি টিভি
চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে, একপ্রকার হাটে হাড়ি ভেঙে দেন
অপু।
এতদিন অপু বিশ্বাস গোপনে আগলে রেখেছিলেন শাকিব খানের ঔরসজাত
সন্তানকে। কলকাতার একটি ক্লিনিকে ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় শাকিব-অপুর
ছেলে আব্রাহাম খান জয়ের। সে সময় অপু বিশ্বাসের সিজারও করা হয়। এ খবর প্রকাশের পর
থেকেই শাকিবের সঙ্গে অপুর মান-অভিমান চলছেই। একটা সময় গিয়ে এ নিয়ে শাকিবের সঙ্গে
অপুর দূরত্ব তৈরি হয়। এখন ছেলেকে নিয়ে রাজধানীর নিকেতনের বাসায় অপু তার পরিবারের
সঙ্গে শাকিবকে ছাড়াই আছেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ছিল শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের পুত্র আব্রাম খান
জয়ের প্রথম জন্মদিন। জন্মদিনের দাওয়াতপত্রে অপু বিশ্বাস ও জয়ের ছবি থাকলেও শাকিব
খানের কোন ছবি ছিল না। তখনও শাকিব-অপুর সম্পর্কের চরম টানাপোড়নের বিষয়টি আলোচনায়
আসে। এমনকি পুত্রের জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও যাননি শাকিব! যদিও শাকিব তার ছেলেন সঙ্গে
সেদিন দিনের বড় একটি অংশ কাটিয়েছেন। এরপর থেকেই তাদের সম্পর্কের টানাপোড়েন দিনকে
দিন বাড়ছিল।
অপু বিশ্বাস ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে
চলচ্চিত্রে পা রাখেন। এরপর ২০০৬ সালে পরিচালক এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে নায়িকা
হিসেবে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি। ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা এই
জুটি একাধারে ৭০টির মতো ছবিতে জুটি বাঁধেন। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে একসময় পরস্পর
প্রেমের বাঁধনে জড়িয়ে যান। এরপর ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন
শাকিব-অপু।