আজ যে রাজা কাল সে ফকির’! অনেক গল্পেই এমনটা শুনেছি আমরা। তবে সেসব গল্প বেশ আগের। বাস্তবে এমন ঘটনা চোখে পড়েনা খুব একটা । এবার সেই পুরোনো কথার সত্যতা মিললো বাস্তবের ঘটনায়। এক সময় তার ছিল ২৫টি গাড়ি ও ৩০ জন দাসী। অন্যান্য বহু কর্মচারীওরাজার সেবায় সর্বদা নিয়োজিত ছিল। তবে এভাবে তার সমগ্র জীবন কাটেনি। এক পর্যায়ে সবকিছু হারিয়ে তিনি বাস্তবেই ভিক্ষুক হয়ে পড়েছিলেন। বেঁচে ছিলেন গ্রামবাসীর দয়া দাক্ষিণ্যে। ভারতের ওড়িশার ওই রাজার মৃত্যু হয় প্রায় দেড় বছর আগে। অজ্ঞাত কারনেই সেসময় খবরটি চাউর হয়নি মিডিয়ায়। কেও কেও দাবি করছেন , এতটাই লোকচক্ষুর আড়ালেই চলে গিয়েছিলেন যে, মৃত্যুর খবরটিও পায়নি কেওই। তার প্রথম জীবন কেটেছিল আমোদ প্রমোদ বিলাসিতায় কিন্তু শেষ জীবনে ভরসা ছিল গ্রামবাসীদের দেওয়া চাল ডাল। ভারতের একটি দৈনিকে ও দ্যা টেলিগ্রাফে প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে রাজার সকরুন ইতিহাস ।ইতিহাস তৈরি করা এই রাজার নাম ব্রজরাজ ক্ষত্রিয় বীরবর চমুপতি সিং মহাপাত্র। জন্ম ১৯২১ সালে। ব্রিটিশ ভারতের ওড়িশার রাজ্য স্টেট তিগিরিয়ায়। কলিঙ্গ থেকে ওড়িশায় পরিবর্তিত পর্বে টিকে ছিল ২৬ টি প্রিন্সলি স্টেট। এর মধ্যে সব থেকে ছোট তিগিরিয়া। ১২৪৫ খ্রিস্টাব্দে রাজস্থানের সোম বংশীয় শাসকদের একটি শাখা এসেছিল ওড়িশায়। প্রতিষ্ঠা করেছিল টুং রাজবংশ। প্রথমে পুরীর রাজার অমাত্য‚ পরে তিগিরিয়া স্টেটের শাসক হয়ে ওঠেন তাঁরা। সেই বংশেই জন্ম রাজা ব্রজরাজের। ভারতবর্ষে রাজতন্ত্র লোপ পাওয়ার আগে তিগিরিয়ার শেষ নৃপতি। তাঁর সেবায় অপেক্ষা করত ৩০ জন দাসী। দাঁড়িয়ে থাকত ২৫ টি বিলাসবহুল গাড়ি। ভারতের স্বাধীনতার পরে ভরসা ছিল বার্ষিক ভাতা। যিনি একসময় অনায়াসে মেরেছেন ১৩ টা বাঘ ও ২৮ টা লেপার্ড‚ সেই বারুদের গন্ধমাখা হাত পাততে হতো সরকারি দরবারে। সামান্য কিছু টাকার জন্য। মাসে এক হাজারেরও কম টাকা। শোনপুরের রাজকন্যা রসমঞ্জরী দেবীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু একসময় স্ত্রী‚ ছয় সন্তান সবাই একে একে নিজেদের জীবন থেকে বিছিন্ন করে তাঁকে। বিয়ে ভাঙার পরে রসমঞ্জরী রাজনীতিতে এসে হয়ে যান বিধায়ক। আর ব্রজরাজ ডুবে যান নিদারুণ দারিদ্র্যে। অভাবে জেরবার হয়ে ১৯৬০ সালে বিক্রি করে দিলেন প্রাসাদ। তারপর সন্তানদের নিয়ে চলে গেলেন স্ত্রীও। ১৯৭৫ সালে বন্ধ হয়ে গেল সরকারি ভাতা। এরপর থেকে বেঁচে ছিলেন গ্রামবাসীদের দয়া-দাক্ষিণ্যে। মাটির বাড়িতে কাটতো দিনরাত । অতীতের প্রজাদের দেওয়া ভাত ডাল সামনের থালায়। মিটত রাজার খাবারের ক্ষুধা।একসময় তাকে ভুলে যান কাছের মানুষেরাও। রাজার নাকি অভিমান ছিলো প্রচন্ড এই জীবন নিয়ে । অনেক কাছের মানুষ থাকলেও তিনি আত্মগোপন করেছিলেন’ আত্মসম্মানের কারনেই’ । চরম অর্থকষ্টে রোগশয্যায় কেটেছিল শেষ কটা দিন। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন রাজা থেকে ফকির হওয়া ব্রজরাজ। হারিয়ে যান এভাবেই এই রাজা।
Post Top Ad
Responsive Ads Here
Wednesday, January 31, 2018

সকল বিত্তশালীদের জন্য ইতিহাসে এই রাজার সকরুন ইতিহাস হতে পারে সবচেয়ে বড় উদাহরন !
Tags
# অন্যান্য
Share This

About News Desk
অন্যান্য
Labels:
অন্যান্য
Post Bottom Ad
Responsive Ads Here
Author Details
Templatesyard is a blogger resources site is a provider of high quality blogger template with premium looking layout and robust design. The main mission of templatesyard is to provide the best quality blogger templates which are professionally designed and perfectlly seo optimized to deliver best result for your blog.